বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট সিরিজের ফলাফল ছিল ১–০, ২–০, ১–০, ২–০, ০–০, ১–০, ২–০, ২–০। স্পষ্টতই, আটটি সিরিজের মধ্যে বাংলাদেশ সাতটিতেই পরাজিত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি সিরিজ ছিল এক ম্যাচের। ২০১৫ সালে ফতুল্লায় অনুষ্ঠিত এক ম্যাচের সিরিজের টেস্টটি বৃষ্টির কারণে ড্র হয়েছিল। এছাড়া, ২০০৭ সালে চট্টগ্রামে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্টও বৃষ্টিবিঘ্নিত ছিল।
এই লড়াইয়ের ইতিহাস নিয়ে নাজমুল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলের সদ্য ভারতে আগমন ঘটেছে। দলের সদস্যরা চেন্নাইয়ে পৌঁছেছে, যেখানে প্রথম টেস্ট শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার।
বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের প্রতি আগ্রহ ও উত্তেজনা অনেক আগেই শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই দুই দেশের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা সিরিজটি নিয়ে আলোচনা করছেন। বাংলাদেশ সম্প্রতি পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছ থেকে বাড়তি সম্মান পাচ্ছেন।
হার্শা ভোগলে, ভারতের প্রখ্যাত ধারাভাষ্যকার, বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে সদা প্রশংসা করে থাকেন এবং এবারও তিনি ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রশংসা করেছেন। যদিও ভারতকে ফেবারিট হিসেবে দেখেছেন, তবুও নাজমুল হোসেনের দল সিরিজটি উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলবে বলে তাঁর প্রত্যাশা।
হার্শা ভোগলে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন, “প্রথমত, ভারত আবারও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভালো করেছে। দুর্ভাগ্যজনক যে, বাংলাদেশকে নিয়মিত আমন্ত্রণ জানানো হয় না এবং তাদের পুরোনো সফরের ওপর নির্ভর করতে হয়। ২০১০ সালের পর তারা ইংল্যান্ডে কোনো টেস্ট খেলেনি এবং অস্ট্রেলিয়া তাদের মাত্র একবার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, সেটাও ২০০৩ সালে। আমি আনন্দিত যে ভারত তাদের টেস্ট ম্যাচ খেলানোর সুযোগ দিয়েছে।”
বাংলাদেশ শেষবার ভারতে টেস্ট সিরিজ খেলেছিল প্রায় পাঁচ বছর আগে, ২০১৯ সালে। সেবার তারা তিনটি টি-টোয়েন্টি ও দুটি টেস্ট খেলেছিল, যেখানে প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতলেও পরবর্তীতে সব ম্যাচেই পরাজিত হয়। বিশেষ করে, টেস্ট সিরিজে তারা কোনো ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি এবং দুটি টেস্টই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল।
তবে, হার্শার মতে, এবারের বাংলাদেশ দল আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। তিনি আশাবাদী যে সাকিব-মুশফিকরা সিরিজে ভালো লড়াই করবে। “ভারত অবশ্যই ভালো অবস্থানে শুরু করবে, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কিছুটা লড়াই আশা করছি। আগে তাদের মধ্যে এমন লড়াইয়ের মানসিকতা দেখা যায়নি, কিন্তু এখন তারা লড়াই করতে পারে।”
হার্শা আরও বলেছেন, “বাংলাদেশের এই টেস্ট দলটি আমার কাছে সবচেয়ে শক্তিশালী মনে হচ্ছে। তাদের পেস আক্রমণ খুবই শক্তিশালী, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছে। তাসকিন আহমেদের জন্য এটি হতে পারে শেষ সুযোগ এবং সে দেখাতে চাইবে কেন তাকে বেশি মূল্যায়ন করা হয়।”
ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও তার বিশ্লেষণ ছিল, “বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে প্রথম ৮ জন সবাই দক্ষ ব্যাটসম্যান। দুজন উইকেটকিপার ও দুইজন স্পিন অলরাউন্ডার রয়েছেন—যাদের মধ্যে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মিরাজের ধারাবাহিক উন্নতি তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তুতি নির্দেশ করে। মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিং গভীরতা বাড়িয়েছে। তবে প্রথম চারজনের কাছ থেকে আরও বেশি রান প্রত্যাশিত।”