এই ৫টি লক্ষণ দেখে বুঝুন, আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে!

হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ বর্তমান সময়ে একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রচুর মানুষ এই মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন, এবং অনেকেই সচেতন না থাকার কারণে সময়মতো চিকিৎসা নিতে পারেন না। হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ার আগে কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যা আপনার হৃদযন্ত্রের সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। এই পাঁচটি লক্ষণ দেখে আপনি আগেভাগেই সতর্ক হতে পারেন এবং হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে পদক্ষেপ নিতে পারবেন।

১. বুকে চাপ বা অস্বস্তি অনুভব করা

বুকে চাপ বা অস্বস্তি হৃদরোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। অনেক সময় বুকে ব্যথা না থাকলেও চাপ বা ভারী অনুভূতি দেখা যায়, যা সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। ব্যথা বাম হাতে, ঘাড়ে বা পিঠে ছড়িয়ে যেতে পারে। এমন অস্বস্তি অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

২. হঠাৎ নিঃশ্বাসে কষ্ট হওয়া

যদি হঠাৎ করে নিঃশ্বাসে কষ্ট হয় বা দম ফুরিয়ে যায়, তবে এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির পূর্বাভাস হতে পারে। বিশেষ করে বিশ্রাম অবস্থায় বা কোনো শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই শ্বাসকষ্ট হলে এটি হৃদযন্ত্রের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

৩. অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা

অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা, এমনকি বিশ্রামের পরও, হৃদরোগের একটি অগোচর লক্ষণ হতে পারে। শরীরের মাংসপেশি বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পৌঁছানোর কারণে এই ধরনের ক্লান্তি হতে পারে। যদি আপনি প্রতিদিনের সাধারণ কাজ করার সময় ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে তা অবহেলা না করে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।

৪. বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরা

অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের আগে বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়। যাদের হৃদযন্ত্রে সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে হঠাৎ মাথা ঘোরা বা অস্বাভাবিকভাবে দুর্বল বোধ করার ঘটনা ঘটতে পারে। এটি রক্তচাপের পরিবর্তনের কারণে হতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাস হতে পারে।

৫. ঠান্ডা ঘাম হওয়া

শরীর থেকে অস্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা ঘাম ঝরা একটি গুরুতর সতর্ক সংকেত হতে পারে। বিশেষ করে কোনো পরিশ্রম না করেও হঠাৎ ঠান্ডা ঘাম হওয়া হৃদযন্ত্রের কার্যক্রমের সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

কিভাবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াবেন?

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে কিছু সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন:

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: সুষম খাদ্য গ্রহণ ও চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
  • ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: ধূমপান ও মদ্যপান হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলো থেকে বিরত থাকা উচিত।
  • স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: মানসিক চাপ কমানোর জন্য যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করা যেতে পারে।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: প্রতি বছর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে হার্টের অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।

হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ ঘটে গেলেও এর কিছু পূর্বাভাস থাকে, যা আগে থেকেই লক্ষ্য করলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। যদি এই পাঁচটি লক্ষণের মধ্যে যেকোনো একটি আপনার মধ্যে দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা গ্রহণ করুন। সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ আপনার হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

Popular

More like this
Related

আপনার শরীরের ৫টি অদ্ভুত সংকেত যা বিপদের পূর্বাভাস দেয়!

মানবদেহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সংকেত দিয়ে আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ অবস্থার...

সাকিব আল হাসান দেশে ফিরলে কী হতে পারে?

আগামী মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে...

মেসিই কি সর্বকালের সেরা ফুটবলার?

লিওনেল মেসির খেলা দেখতে যেন সবকিছুই সহজ মনে হয়।...

সাকিবকে একাদশ থেকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠে এলো

সাকিব আল হাসানের মাঠ ও মাঠের বাইরের পারফরম্যান্স নিয়ে...