সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তিনি দেশে ফিরবেন কবে? নাকি ভারতেই রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে থাকবেন? এমন অনেক গুঞ্জনই চলছে রাজনৈতিক মহলে। এর আগে শোনা যায়, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন শেখ হাসিনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কিংবা ফিনল্যান্ডে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল দ্য কনভারসেশনের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
বিদেশে আশ্রয় চেষ্টার গুঞ্জন
যদিও শেখ হাসিনাকে নিয়ে এর আগে এমন গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এসব দাবিকে নাকচ করে দিয়েছিলেন। তিনি জানান, তার মা কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন না এবং কোনো দেশের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনও করেননি। জয় আরও জানান, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসবেন। তবুও, শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানারকম আলোচনার শেষ নেই।
ভারত কী আশ্রয় দেবে?
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যদি ভারত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তবে তাকে ফেরত পাঠানো ভারতের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারতের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তবে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে শেখ হাসিনার ইস্যু ভারতের জন্য কিছুটা অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া
ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে ইতিমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মতো প্রধান বিরোধী দলগুলো তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা শতাধিক মামলা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত চলছে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতির পটপরিবর্তন
গত জুলাইয়ের শুরুতে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামে, যা সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলন সরকার পতনের দিকে মোড় নেয়। অবশেষে ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন এবং ভারতে চলে যান। এর মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগের টানা ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য
ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং এজন্য তাকে ভারতে আশ্রয় থেকে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।